প্রকাশিত: ০৩/০৯/২০১৬ ৮:১২ এএম

1472861989_Womanমোয়াজ্জেমুল হক/এইচএম এরশাদ :: কক্সবাজার ও বান্দরবানের গহীন অরণ্যে গড়ে উঠেছে দেশীয় পদ্ধতিতে অস্ত্র তৈরির বহু কারখানা। এসব অস্ত্র সস্তা হওয়ায় আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের কাছে ভাল চাহিদা রয়েছে, যে কারণে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির অব্যাহত অভিযান সত্ত্বেও অবৈধ অস্ত্র তৈরির কারখানা বন্ধ করা যাচ্ছে না। এসব কারখানায় অস্ত্র বানানো থেকে শুরু করে সরবরাহ চলে আসছে গোপনে অতি সতর্কতার সঙ্গে। কোন কোন সময় এসব গোপন কারখানার ঘটনা ফাঁস হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালায়। উদ্ধার হয় বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র, ধরা পড়ে অস্ত্র তৈরির কারিগর, কর্মচারী। কিন্তু এ পর্যন্ত অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত একজন গডফাদারও ধরা পড়েনি, যা সবচেয়ে বিস্ময়কর। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার উখিয়ার চৌহানখালীর গহীন পাহাড়ী এলাকায় দেশীয় অস্ত্র তৈরির একটি কারখানার খবর পাওয়ার পর র‌্যাব অভিযান চালিয়ে বেশকিছু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে। গ্রেফতার করেছে অস্ত্র তৈরির কারিগর আবুল হাশিমকে। পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কক্সবাজার ও বান্দরবানের বিক্ষিপ্ত স্থানে গড়ে ওঠা অবৈধ দেশীয় অস্ত্র তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে আছে অস্ত্র চোরাচালানের সাত গডফাদার।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী, রামুর ঈদগড় ও পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন অরণ্যে এসব দেশীয় অস্ত্র তৈরির কারখানার আধিক্য রয়েছে। এসব কারখানায় তৈরি অস্ত্রের বেচাকেনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে মৌলবাদী বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য ও মিয়ানমারের আরএসও ক্যাডাররা। দেশীয় প্রযুক্তির বিভিন্ন ধরন ও সাইজের অস্ত্র তৈরি হয় লেদ মেশিনসহ ছোট ছোট বিভিন্ন মেশিনারিজ দিয়ে লৌহজাত সামগ্রীর সমন্বয়ে। এসব সরঞ্জাম দিয়ে দেশীয় অস্ত্র তৈরি করা কঠিন কোন কাজ নয় বিধায় অবৈধ এ তৎপরতা বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।

কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে বান্দরবান এলাকাজুড়ে মিয়ানমারের সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ পরিমাণ স্থলসীমান্ত। দু’দেশের সীমান্ত পুরোপুরিভাবে এখনও বাংলাদেশের বিজিবি ও মিয়ানমারের বিজিপির সার্বক্ষণিক নজরদারিতে আনা যায়নি। তবে বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে এ অরক্ষিত সীমান্তে ক্যাম্প প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। প্রায় ৩০ কিলোমিটারেরও বেশি পাহাড়ী উঁচু-নিচু এলাকার সীমান্ত সম্পূর্ণ অরক্ষিত। এ সীমান্ত দিয়ে পাহাড়ী সন্ত্রাসী ও মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী বেশকিছু সংগঠনের সদস্যরা অবাধে চলাফেরা করে থাকে। প্রকৃত অর্থে এরাই বিভিন্ন ধরনের মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। এর পাশাপাশি সীমান্তের এপারে এবং ওপারে দেশীয় অস্ত্র তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। তবে এর কোন পরিসংখ্যান নেই। এসব এলাকা এত গহীনে যে, এ বিষয়টি নিরূপণও সহজ কোন বিষয় নয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা মিয়ানমার থেকেও গোপনে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে আসে এদেশে। প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে অস্ত্র তৈরি, বেচাকেনা এবং বিভিন্ন স্থানে সরবরাহও করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে ১৯৯১ সালের দিকে অস্ত্র ব্যবসায়ী ও অস্ত্র চোরাচালানিদের বেপরোয়া ভাব পরিলক্ষিত হয়। মিয়ানমারের মতো ভারত থেকেও সীমান্ত গলিয়ে চোরাই পথে অবৈধ অস্ত্রের চালান এসে থাকে। বাংলাদেশের মতো মিয়ানমার ও ভারতের কোন অস্ত্র চোরাচালানি এদেশে কখনও ধরা পড়েনি। তবে এদের আনাগোনা রয়েছে। কক্সবাজারের পাহাড়ী অঞ্চলে অস্ত্র তৈরির কারিগররা ব্যবহারের বাহনায় কামারের দোকান, স্ক্র্যাপ আড়ত, রড় এবং স্যানিটারি দোকান থেকে বাছাই করে লোহার পাইপ, ড্রিল মেশিন, হাতুড়ি ও বিভিন্ন সরঞ্জামের সাহায্যে দেশীয় বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র তৈরি করে থাকে। উল্লিখিত এলাকার গহীন অরণ্যে বা নির্ধারিত জায়গায় তাদের নিয়োজিত কাঠমিস্ত্রীর মাধ্যমে কাঠের অংশটুকু তৈরি করে নেয়। পরবর্তীতে অস্ত্র তৈরি করে অস্ত্র কারিগররা। জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে থাকা আরএসও নেতা (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) রোহিঙ্গা জঙ্গী, স্থানীয় মুষ্টিমেয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা এদের অর্থায়নের পাশাপাশি মদদ যুগিয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই সব এলাকায় ইতোপূর্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী কয়েকটি অস্ত্র কারখানা গুঁড়িয়ে দেয়। বহু অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় বিভিন্ন অস্ত্র তৈরির কারিগরদের। বিশেষ করে মহেশখালীর গহীন জঙ্গলে একাধিক অস্ত্র কারখানার সন্ধান পেয়ে প্রশাসন অভিযান চালিয়েছে ইতোপূর্বে। তবে গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেছে বারে বারে।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার উখিয়ার চোয়ানখালীতে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে একটি অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পায়। সেখান থেকে ১০টি দেশীয় অস্ত্র, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ অস্ত্র তৈরির কারিগর আবুল হাশিমকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার আবুল হাশিম ওই এলাকার মৃত বাছা মিয়ার পুত্র। অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছেÑ ছয়টি একনলা বন্দুক, একটি ওয়ান শূটারগান, তিনটি পিস্তল। এছাড়া চারটি তাজা কার্তুজ ও নানা সরঞ্জাম। সরঞ্জামাদির মধ্যে রয়েছেÑ ড্রিল মেশিন, হাতুড়ি, পাইপসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র তৈরির যন্ত্রাংশ। এ ঘটনায় র‌্যাব-৭-এর নায়েব সুবেদার সোলাইমান (বিজিবি) বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মশিউর আলম শুক্রবার জনকণ্ঠকে জানান, গ্রেফতারকৃত অস্ত্র তৈরির কারিগরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এদিকে, উখিয়ার গহীন অরণ্যে অস্ত্রের কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে জনমনে উদ্ধেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ অস্ত্র তৈরি কারখানায় কয়েক প্রকার লোক জড়িত রয়েছে। প্রথমত, বিভিন্ন স্থানে গোপনে অস্ত্র তৈরির কারখানা বানিয়ে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে থাকে তাদের তৈরিকৃত অস্ত্র। এসব অস্ত্রের ক্রেতারা বিভিন্ন জাতের। পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়িতে দু’ছড়ির বাঁকখালী এলাকায় রয়েছে অস্ত্রধারীদের একটি শক্তিশালী গ্রুপ। ওই গ্রুপের দলপতি জনৈক শাহীন। ওই শাহীন গ্রুপের সঙ্গে সখ্য রয়েছে আরএসও, পার্বত্য অঞ্চলের জেএসএসসহ মিয়ানমারের একাধিক বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গীগোষ্ঠীর। সদ্য কারামুক্ত নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান, রামু বৌদ্ধবিহারে ধ্বংসলীলার অন্যতম আসামি জামায়াত নেতা তোফায়েল আহমদ সন্ত্রাসী ওই শাহীন গ্রুপকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।

কক্সবাজারের উপকূলীয় মহেশখালী, টেকনাফ, উখিয়া, রামুর ঈদগড় ও নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন পাহাড়ের গহীন জঙ্গলে দেশীয় অস্ত্র তৈরি ও নানা রকম গোলাবারুদ তৈরি বন্ধ করা যাচ্ছে না। প্রশাসনের পক্ষে খবর পেয়ে অভিযান চালানো হলেও এরা দ্রুত সটকে পড়ে। অন্য স্থানে গড়ে তোলে একই ধরনের কারখানা। সম্প্রতি সারাদেশে জঙ্গী হামলা, নাশকতা ও রোহিঙ্গা তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় এলাকার দাগী ও দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী দল ও গ্রুপগুলোর কাছে ওসব অস্ত্রের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং কমদামে পাওয়া যায় দেখে বিভিন্ন গ্রুপ এসব অস্ত্রের অন্যতম ক্রেতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পুলিশ, র‌্যাব ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এর আগে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছিল। এলাকার কিছু মুখোশধারী জনপ্রতিনিধি ও কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি অর্থনৈতিকভাবে ওই সব কারিগরকে অস্ত্র তৈরিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বড় মহেশখালীর বড় ডেইল, হোয়ানকের কেরুনতলী পাহাড়, কালারমার ছড়ার ফকির জুমপাড়া পাহাড়, শাপলাপুরের সোলতানÑ কালাইয়া নামে খ্যাত পাহাড়ী জুম এলাকায় একাধিক অস্ত্র তৈরির কারখানা রয়েছে। অস্ত্র তৈরির কারিগররা এসব স্থানের গহীন পাহাড়ে খোদাই করে দু’দিকে রাস্তা রেখে আত্মরক্ষার পরিবেশে তারা ওয়ার্কসপের মতো করে এ অস্ত্র তৈরির কারখানাগুলো স্থাপন করে সেখানে দেশীয় অস্ত্র তৈরি করে থাকে। বিভিন্ন স্থানে তাদের একাধিক সোর্স থাকায় র‌্যাব, পুলিশ অভিযানে যাওয়ার আগাম খবর তারা মোবাইলের মাধ্যমে সোর্সের কাছ থেকে পেয়ে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে গা-ঢাকা দেয়। ওসব অস্ত্র তৈরির কারখানাগুলোতে নিয়মিত আসা-যাওয়া রয়েছে হোয়ানক, নতুনবাজার, কালারমারছড়া, উত্তর নলবিলা এলাকার দাগী সন্ত্রাসী ও একাধিক মামলার ফেরারি আসামিদের। এখানে একটি অস্ত্র তৈরি করতে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা খরচ হলেও সেটি স্থানীয়ভাবে চার-পাঁচ হাজার টাকায় এবং জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাত-আট হাজার টাকায় বিক্রি হয়। তাদের রয়েছে শক্তিশালী যোগাযোগ নেটওয়ার্ক। ওই নেটওয়ার্ক সাগরপথে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় লবণ ও বিভিন্ন মালামাল পরিবহনের কার্গো বোট, ফিশিং বোট, লবণবোঝাই ট্রাক ও লাকড়ির গাড়ির ভেতর লুকিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যোগান দিয়ে থাকে। অপরদিকে তাদের রয়েছে কিছু স্বামী পরিত্যক্ত ও বিপথগামী মহিলা সদস্য। বিশেষ করে সড়কপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র পৌঁছে দেয়াসহ বেচাবিক্রির ব্যাপারে তারা মহিলাদের প্রাধান্য দিয়ে থাকে। কারণ মহিলাদের সহজেই কেউ সন্দেহ করে না। ফলে ওসব মহিলা বোরকা পরে তাদের ভ্যানটিব্যাগসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র লুকিয়ে সহজেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নজরদারি এড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়।

অধরা রহস্যময় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা ॥ দেশের অস্ত্র ব্যবসার আলোচিত নাম নাইক্ষ্যংছড়ির জামায়াত নেতা তোফায়েল আহমদ ও রামুর গর্জনিয়ার সাবেক জামায়াত নেতা নজরুল ইসলাম। কক্সবাজারকেন্দ্রিক অস্ত্র চোরাচালান সিন্ডিকেটের এক নম্বর গডফাদার হিসেবে আন্ডারওয়ার্ল্ডে তাদের পরিচিতি রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন ও কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর স্বীকারোক্তিতে অস্ত্র সরবরাহক হিসেবে বহুবার উঠে এসেছে রহস্যময় নজরুল চেয়ারম্যানের নাম। এক সময় অস্ত্র কিনতে ঢাকা-চট্টগ্রামের অস্ত্রধারীরা কক্সবাজারে অবাধ যাতায়াতের ফলে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নজরুলের গভীর সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি জড়িয়ে পড়েন আন্ডারওয়ার্ল্ডের সদস্যদের সঙ্গে। প্রচার পেতে তিনি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি শুরু করেন। যোগ দেন আরএসওতে। পরে অর্থবিত্ত ও সন্ত্রাসের প্রভাব খাটিয়ে ১৯৯৭ সালে তিনি গর্জনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর তার দাপট আরও বেড়ে যেতে থাকে। নির্বিঘেœ চালিয়ে যেতে থাকেন অস্ত্র ব্যবসা। খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়ার জুমশিয়া পাহাড়ে গড়ে তোলেন আস্তানা। জুমশিয়া পাহাড় থেকে গ্রেফতারকৃত রোহিঙ্গা জঙ্গী সেলিমের জবানবন্দী থেকে সর্বপ্রথম অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে নজরুলের নাম বেরিয়ে আসে। সেলিমের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ওই সময় নজরুল চেয়ারম্যানসহ ২৪ জনকে আসামি করে পুলিশের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয় অস্ত্র মামলা। বিচক্ষণ নজরুল মামলা থেকে খালাস পেতে রাতারাতি বদলে ফেলেন তার রাজনৈতিক মতাদর্শ। যোগ দেন তৎকালীন সরকারী দলে।

সূত্র জানায়, কক্সবাজারের অস্ত্র চোরাচালানের সাত গডফাদারের মধ্যে নজরুল রয়েছেন শীর্ষে। মহেশখালীর সরোয়ার নিজাম হলেন তার ব্যবসায়িক এজেন্ট। চট্টগ্রাম ও ঢাকায় অস্ত্রপাচারে তাদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করত গিয়াস হাজারিকা। চট্টগ্রামের নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ মুহুরী হত্যাকা-ে জড়িত ১নং আসামি মন্টু তার স্বীকারোক্তিতে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য দেয়। মন্টু বলেছে, তার কাছ থেকে উদ্ধারকৃত একে-৫৬ রাইফেলটি সে নজরুল চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ৯৫ হাজার টাকায় কিনেছিল। এ ঘটনায় পুলিশ নজরুলকে কক্সবাজার শহর থেকে ২০০৩ সালে আটক করে। নজরুলের অস্ত্র দিয়েই দেশের সবচেয়ে আলোচিত বহদ্দারহাটে ছাত্রলীগকর্মীদের গাড়িতে ব্রাশফায়ার (এইট মার্ডার) করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এ মামলার আসামি গিয়াস হাজারিকার স্বীকারোক্তি থেকে যা পরিষ্কারভাবে বেরিয়ে আসে। এক সময় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও সভাপতি-সম্পাদকের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত এ নজরুল। এসব তথ্য পুলিশ সূত্রেও স্বীকার করা হয়েছে। সুত্র , জনকন্ঠ

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু, দৈনিক উৎপাদন ৩০ মেগাওয়াট

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর খুরুশকুল উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছেছবি: প্রথম আলো কক্সবাজার সদর উপজেলার ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং!

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে ‘টার্গেট কিলিং’। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ...

জান্নাতুলকে খুনের কথা আদালতে স্বীকার করলেন কক্সবাজারের রেজা

রাজধানীর পান্থপথে আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ...